ব্যাংকিং ক্যারিয়ার পরামর্শ: সামাজিক সম্মান, ভাল বেতন, চাকরির সুরক্ষা এবং দ্রুত ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ সব মিলিয়ে ব্যাংকের চাকরি এখন বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও গ্রহণযোগ্য একটি ক্যারিয়ার। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্য রেখে ব্যাংকের সংখ্যা ক্রমশই বেড়ে ছলছে। এই ব্যাংকগুলোতে দক্ষ জনবলের রয়েছে অনেক চাহিদা। সদ্য স্নাতক প্রাপ্ত যে কোনও যোগ্য প্রার্থী ব্যাংক চাকরিতে যোগ দিতে পারেন। বাংলাদেশ ব্যাংক সহ বিভিন্ন ব্যাংকের নিয়োগ সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন।
Table of Content
ব্যাংকিং ক্যারিয়ার পরামর্শ – ব্যাংকে চাকরি পাওয়ার যোগ্যতা
বাংলাদেশ ব্যাংক প্রাথমিকভাবে সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে, এই পদের জন্য আপনাকে খুবই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিতে হবে। যে কোনও বিষয়ে ৪ বছরের স্নাতক ডিগ্রিধারীরা এই পদে আবেদন করতে পারেন। তবে শিক্ষাব্যবস্থার যে কোনও পর্যায়ে ফলাফল তৃতীয় বিভাগে থাকলে আপনি আবেদন করতে পারবেন না। এছাড়াও, প্রযুক্তিগত / টেকনিক্যাল পদগুলির জন্য আলাদা নিয়োগ দেওয়া হয়। বাংলাদেশের ব্যাংকের সহকারী পরিচালকের মাসিক বেতন প্রায় ৪০,০০০ টাকা। আবেদনের সর্বাধিক বয়সসীমা ৩০ বছর। তবে মুক্তিযোদ্ধা কোটা সুবিধাভোগীদের বয়সসীমা ৩২ বছর।
ব্যাংকিং ক্যারিয়ার পরামর্শ – ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি
ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি (বিএসসি) বাংলাদেশের ১৪ টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে থকে সাধারনত এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কয়েকটি ব্যাংকের শূন্য পদের জন্য সমন্বিত পরীক্ষা হয় ও মেধাক্রম অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া দেয়া হয়। স্নাতক ডিগ্রিধারী যে কেউ ব্যাঙ্কার্স সিলেকশন কমিটি পরীক্ষা দিতে পারে। তবে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট বা সমমানের বা ততোধিক পরীক্ষার মধ্যে কমপক্ষে একটি অবশ্যই প্রথম বিভাগ / শ্রেণি থাকতে হবে। দ্রষ্টব্য যে তৃতীয় শ্রেণি কোনও পর্যায়ে গ্রহণযোগ্য নয়।
রাষ্ট্র-মালিকানাধীন ব্যাংকগুলিতে সুপারভাইজার, অফিসার এবং সিনিয়র পদও নিয়োগ করা হয়। এছাড়া আইটি বিশেষজ্ঞ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী এবং অ্যাকাউন্টিং শাখায় বিশেষ নিয়োগ রয়েছে। এই নিয়োগকারীদের অবশ্যই প্রাসঙ্গিক বিষয়ে একটি ডিগ্রি থাকতে হবে।
ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির নিয়োগ পরীক্ষা –
ব্যাংকিং ক্যারিয়ার পরামর্শ
ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সকল নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সর্বাধিক বয়সসীমা ৩০ বছর এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটা সুবিধাভোগীদের জন্য এটি ৩২ বছর হয়। বাংলাদেশের বেসরকারী ও বিদেশী ব্যাংকগুলি তাদের নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। তবে বেশিরভাগ ব্যাঙ্কের কিছু সাধারণ নিয়ম রয়েছে।
যদি ব্যাংকের কোনও নির্দিষ্ট পদে শূন্যপদ থাকে, তবে কেবলমাত্র পদে চাকরির জন্য আবেদন করা হয়। তবে এ জাতীয় নিয়োগে অন্যান্য বিভাগে চাকরির সুযোগ পাওয়া যায় না। বিভিন্ন ব্যাংক দক্ষ কর্মী তৈরির লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি অফিসার (এম.টি.ও) বা প্রবেশনারি অফিসার (পি.ও.এস) নিয়োগ দেয়। এই ক্ষেত্রে, প্রাথমিক পর্যায়ে আপনার জন্য কোনও নির্দিষ্ট অবস্থান থাকবে না। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ এবং প্রবেশনারি সময় শেষ হওয়ার পরে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন বিভাগে সিনিয়র অফিসার বা প্রিন্সিপাল অফিসার হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। বর্তমানে যারা বিভিন্ন ব্যাংকে পরিচালক পরিচালনা করছেন তাদের অনেকেই এই প্রক্রিয়াতে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন।
সাধারণত, এক বছরের প্রশিক্ষণ সময়কালে মাসিক বেতন হয় মাসিক ৩০-৫০ হাজার টাকা, তবে কিছু ব্যাংক মাসিক ৭০-৮০ হাজার টাকাও দিয়ে থাকে।
ব্যাংক চাকরির প্রস্তুতি – ব্যাংকিং ক্যারিয়ার পরামর্শ
যে কোনও বিষয়ে ভাল ফলাফল স্নাতক ডিগ্রিধারীরা বেসরকারি ও বিদেশী ব্যাংকগুলোতে আবেদন করতে পারেন। তবে এমবিএ এবং অর্থনীতি বিভাগের ডিগ্রিধারীরা অন্যান্য প্রার্থীদের তুলনায় কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন। এমবিএ ও অর্থনীতির ডিগ্রিধারীরা অন্য প্রার্থীর চেয়ে কিছুটা এগিয়ে থাকেন’। ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালিসিস, ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড মার্চেন্ট ব্যাংকিং, ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড, ম্যানেজারিয়াল ইকোনমিক্স, বাজেট অ্যানালিসিস, পুঁজিবাজার-এসব বিষয়ে পড়াশোনা থাকার কারণে তাদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়’। অনেক পদে গণিত ও পরিসংখ্যানের শিক্ষার্থীরাও বিশেষ সুবিধা পান। তবে মানবসম্পদ পরিচালনা এবং সাধারণ ব্যাংকিং সহ বেশিরভাগ কর্মসংস্থানের সকল শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ রয়েছে।
বেসরকারী এবং বিদেশী ব্যাংকগুলির সাধারণত সর্বোচ্চ বয়সের সীমা ৩০ বছর থাকে।
ব্যাংক চাকরিতে ভাল বেতনের পাশাপাশি প্রতি বছর ২ টি সরকারী ভাতা, লভ্যাংশের বোনাস, বিনা সুদে গৃহঋণ, সন্তানদের জন্য শিক্ষা ঋণসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। এছাড়া রয়েছে সমাজে মানসম্মত জীবন যাপনের পাশাপাশি রয়েছে চাকরির নিশ্চয়তা’।
ব্যাংকিং খাতে প্রচুর কাজ করতে হয়, ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে একজন ব্যাংকারকে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হবে। এই সেক্টরে চাকরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হলো সহজে ছুটি পাওয়া যায়না বা ছুটির পরিমাণ অন্যান্য চাকরির ছুটি থেকে থেকে অনেক কম।
আপনি যদি কঠোর পরিশ্রমী হন, সুন্দর মানসিকতা নিয়ে একটি সুরক্ষিত ক্যারিয়ার গড়তে চান তবে আপনার পক্ষে ব্যাংকিং চাকরি ক্যারিয়ার গড়ার একটি সেরা মাধ্যম হতে পারে। প্রতিদিনই ব্যাংকগুলোর নিয়োগ পরীক্ষার প্রতিযোগিতা বাড়ছে। তাই এই খাতটিতে ক্যারিয়ার গড়তে এখন নিজেকে প্রস্তুত করা শুর করুন।
3 thoughts on “ব্যাংকিং ক্যারিয়ার পরামর্শ: কেন করবেন ব্যাংক চাকরি”